রাজশাহী , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন : প্রধানমন্ত্রী জনগণের জানমাল রক্ষার্থে ও যেকোন অরাজকতা রুখতে আমরা মাঠে ছিলাম, আছি: মেয়র লিটন ঢাকায় সহিংসতায় অংশ নেয় রাজশাহীর জেএমবি সদস্যরা! ক্ষতিগ্রস্ত বিটিভি ভবন পরিদর্শন করলেন শেখ হাসিনা এইচএসসি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি ও ফেসবুক নিয়ে যে নির্দেশনা দিল বিটিআরসি এইচএসসির আরো চারটি পরীক্ষা স্থগিত নরসিংদী কারাগার থেকে পলাতক ৩৩১ কয়েদির আত্মসমর্পণ স্থগিত হওয়া এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর কোটা নিয়ে আপিল শুনানি রোববার এবার বিটিভির মূল ভবনে আগুন ২১, ২৩ ও ২৫ জুলাইয়ের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত অবশেষে আটকে পড়া ৬০ পুলিশকে উদ্ধার করল র‍্যাবের হেলিকপ্টার উত্তরা-আজমপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৪ রামপুরা-বাড্ডায় ব্যাপক সংঘর্ষ, শিক্ষার্থী-পুলিশসহ আহত দুই শতাধিক আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থানে রাজশাহীতে দাঁড়াতেই পারেনি কোটা আন্দোলনকারীরা সরকার কোটা সংস্কারের পক্ষে, চাইলে আজই আলোচনা তারা যখনই বসবে আমরা রাজি আছি : আইনমন্ত্রী আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কথা বলবেন আইনমন্ত্রী রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের সাথে সংঘর্ষ, পুলিশের গাড়ি ভাংচুর, আহত ২০

শহীদ মিনার গড়ে ওঠার পিছনের ইতিহাস

  • আপডেটের সময় : ১১:৩৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩
  • ২৭ টাইম ভিউ
Adds Banner_2024

জনপদ ডেস্ক: ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি সহ ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর ফিরে এলেই মনে পড়ে শহীদ মিনারের কথা। ৫২’র ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি উজ্জল আত্মত্যাগ, গৌরব আর সাহসের স্মারক বহনকারী মাস। ফেব্রুয়ারি মাস মহান ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের কথা ভাবলেই প্রথমেই কল্পনার চোখে যেন ভেসে ওঠে শহীদ মিনার। আর আজকের এই শহীদ মিনার যে প্রথম নয়। এর আগেও ভাষার জন্য শহীদদের স্মরণে বেশ কয়েকবার তৈরি হয়েছিল শহীদ মিনার।

১৯৫২-সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে করা মিছিলে কাঁদানে গ্যাস ও গুলি চালানো হয়। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ মিছিলেও আবার গুলি চালায় পাকিস্তানের সামরিক জান্তা সরকার। এতে শহীদ হন রফিক, সালাম, বরকত, আউয়াল, শফিউর সহ আরও অনেকে।তাদের এই মহান আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান ও বিনম্র শ্রদ্ধার প্রতীক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার যা বর্তমানে অবস্থিত ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে । বর্তমান আমরা যে শহীদ মিনার দেখছি হামিদুর রহমান হলেন এর স্থপতি । তবে মজার বিষয় এই শহীদ মিনারটি কিন্তু সর্বপ্রথম তৈরি হয়নি। ক্রমানুযায়ী বিচার করতে গেলে এটির পূর্বে আরও কয়েকবার নির্মিত হয়েছিল শ্রদ্ধার পরিচয় বহনকারি এ স্মৃতিস্তম্ভ।

Banglar Janapad Ads

যেভাবে প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ হয়: ২১ ফেব্রুয়ারির ছাত্রজনতার মিছিলে গুলির ঘটনার পর ২২ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা শহীদ মিনার তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। যথারিতি কাজ শুরু হয় ২৩ ফেব্রুয়ারি। ঢাকায় কারফিউ থাকা সত্ত্বেও ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কাজ শুরু হয়। আর শহীদ মিনারটি তৈরি করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। বদরুল আলম ও সাঈদ হায়দারের নকশায় শুরু করে রাতভর শহীদ মিনারটি তৈরির কাজ শেষ হয়। শহীদ মিনারটি ছিল ১০ ফুট উঁচু ও ৬ ফুট চওড়া। মিনার তৈরির তদারকির দায়িত্বে ছিলেন জিএস শরফুদ্দিন আর (ইঞ্জিনিয়ার শরফুদ্দিন বলে বেশি পরিচিত ছিলেন তিনি। আর বদরুল আলম ডিজাইন করেছিলেন এবং তাদের সহযোগীতা করেন দুজন রাজমিস্ত্রী।

বর্তমান শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ছাত্র হোস্টেলের (ব্যারাক) ১২ নম্বর শেডের পূর্ব প্রান্তে হয়েছিল। মেডিকেল কলেজ সংস্কার ও সম্প্রসারণের নিমিত্তে রাখা ইট ও বালু এবং পুরান ঢাকার পিয়ারু সর্দারের গুদাম থেকে আনা সিমেন্ট দিয়ে সাড়ে দশ ফুট উঁচু (৩.২ মিটার) ও ৬ ফুট (১.৮ মিটার) চওড়া শহীদ মিনারটি তৈরি করা হয়। পুরাতন ঢাকার পঞ্চায়েত সর্দারদের মধ্যে একজন ছিলেন পিয়ারু সর্দার। তার কাছে ছাত্ররা সহায়তা চাইলে নির্মাণের কাঁচামাল দিয়ে সাহায্য করেন তিনি। ভোরের আলো ফোটার আগেই শেষ করা হয় এ নির্মাণ কাজ। এরপর কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়ে সামনে লিখে দেয়া হয় ‘শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’।

শহীদ শফিউরের পিতা মাহবুবুর রহমান কর্তৃক ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে অনানুষ্ঠানিকভাবে এ শহীদ মিনারের উদ্বোধন করা হয়। ইতোমধ্যেই দৈনিক আজাদ পত্রিকায় ‘শহীদ বীরের স্মৃতিতে’শিরোনামে শহীদ মিনারের একটি খবর ছাপা হয়। এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দিন।ওই দিন বিকেলে পুলিশ মেডিকেল কলেজ হোস্টেল এলাকা ঘিরে ফেলে আর প্রথম শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে দেয়। পরে ঢাকা কলেজে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হলে সেটিও সরকারের নির্দেশে ঘুড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠে একাধিক স্মৃতিস্তম্ভ ।

জানা গেছে, ঢাকায় সর্ব প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হবার আগেই রাজশাহী সরকারী কলেজের ছাত্ররা ইট ও কাঁদা দিয়ে প্রথম শহীদ মিনার তৈরি করেছিলেন। রাতভর জেগে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করার পর সকালে পুলিশ গিয়ে তা ভেঙ্গে দেয়া। এসময় পুলিশের সাথে ছাত্রদের পিকেটিং করে। রাজশাহীতে নির্মিত শহীদ মিনারে লেখা ছিল “উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই। নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।”

১৯৫২-সালে রাজশাহী কলেজে বাংলাদেশের প্রথম শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ অপরাধ ট্রাইব্যুানেলর প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু। তিনার মতে, রাজশাহীর শহীদ মিনার তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল ২১ ফেব্রুয়ারিতেই আর এটি এক রাতেই তৈরি হয়েছিল। এটিই যে প্রথম শহীদ মিনার সেটা প্রমাণের কোনো চেষ্টা তারা না করলেও সময়ের হিসেবেই রাজশাহীর শহীদ মিনারটি ঢাকারটির আগেই তৈরি হয়েছিল বলেই তিনি অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

প্রভাতফেরির সূত্রপাত: ১৯৫৩-সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী শহীদ দিবস পালন করা হয় আর লাল কাগজ দিয়ে একই স্থানে পূর্বের শহীদ মিনারের অনুরূপ আর একটি প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়। পরে সেটিকেও কালো কাপড়ে ঢেকে দেয়া হয়। আর সেখান থেকেই প্রথমবারের মত প্রভাতফেরি বের করেন ছাত্ররা। এভাবেই প্রভাতফেরির সূত্রপাত ঘটে। পরের বছর (১৯৫৪ সাল) একি রূপে ২১ ফেব্রুয়ারিতে আবারও প্রভাতফেরি বের করা হয় ।

১৯৫৪-সালের ১০ মার্চ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে ৩ রা এপ্রিল শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক ৪ সদস্য বিশিষ্ট যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা গঠন করেন। ৯ মে এর অধিবেশনে তারা ঘোষণা করেন, তাদের ২১ দফা অনুযায়ী, শহীদ মিনার পুনঃনির্মাণ করা হবে আর ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘শহীদ দিবস’ আখ্যা দেয়া হবে। কিন্তু তারা এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করতে ব্যর্থ হন এবং ৩০ মে এই সরকারের পতন ঘটে। তবে ১৯৫৪-সালে ছোট আকারের একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয় যার উদ্বোধন করেন নাট্যগুরু নুরুল মোমেন। আর ১৯৫৭ সালে বড় আকারে শহীদ মিনার তৈরির কাজ শুরু হয় ।

শহীদ মিনার (১৯৬৩-১৯৭১):
১৯৫৬-সালে আবুল হোসেনের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন পূর্তমন্ত্রী আবদুস সালাম খান শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে একটি স্থানকে নির্বাচন করেন। পরবর্তীকালে সেখানে জনৈক মন্ত্রীর শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার কথা থাকলেও জনতার বিপুল আপত্তির মুখে তা করেন না। পরে ভাষাশহীদ রিকশাচালক আউয়ালের মেয়ে বসিরনকে দিয়ে শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করানো হয়।

১৯৫৬-সালে এ.কে. ফজলুল হক ও আ: লীগের নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের উদ্যোগে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানেই শহীদ দিবস পালিত হয় এবং এতেই শহীদ মিনারের নির্মাণ প্রক্রিয়া আরও বেগবান হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের সম্মুখে শহীদ মিনার কমপ্লেক্স তৈরির পরিকল্পনা করা হয়।হামিদুর রহমান ও নভেরা আহমেদ স্থাপত্য নকশার দায়িত্ব পান। ১৯৫৭-সালের ৯ নভেম্বর আবার এটি তৈরির কাজ শুরু হলেও সামরিক আইন জারির কারণে নির্মাণকাজ বিলম্বিত হয়। এর পর ১৯৬২-সালে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর আজম খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েদেন যে,শহীদ মিনারের নকশায় পরিবর্তন এনে একে সংক্ষিপ্তাকারে শেষ করতে বলেন। ১৯৬৩-সালের ২১ ফেব্রুয়ারী ভাষাশহীদ বরকতের মা হাসিনা বেগমের হাতে শহীদ মিনার স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন হয়। যদিও তখনো সম্পূর্ণ কমপ্লেক্সের কাজ সম্পন্ন হয়নি।

হামিদুর রহমান ও নভেরা আহমেদকে নিয়ে যে শহীদ মিনার তৈরির পরিকল্পনাটি নেয়া হয়েছিল তা হলো- কেন্দ্রীয় বেদীতে অর্ধ-বৃত্তাকার কলাম মা ও তার ভূপতিত সন্তানদের নির্দেশ করবে।চোখে সূর্যের আলোর ন্যায় প্রতিফলন নির্দেশ করতে হলুদ ও গাঢ় নীল রং এর কাঁচ কলামগুলোতে বসানোর কথা ছিলো। আর মেঝেটি হবার কথা ছিল মার্বেল পাথরের যেন এই কলামগুলোর ছাঁয়াসমূহের সময়ক্রমে স্থান পরিবর্তন এতে দেখা যায়।

বেদীর নিচে বেজমেন্টে-১৫০০ বর্গফুট (১৪০ বর্গমিটার) এর একটি প্রাচীরচিত্রে উল্লেখ থাকার কথা ছিল ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের এবং বাংলা অক্ষরযুক্ত একটি রেইলিং সৌধটির সামনে স্থাপনের কথাও ছিল। আর লাল ও কালো রঙ্গা দুটি পায়ের ছাপ অঙ্কনের কথা ছিলো যাকিনা ভাষা আন্দোলনের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেয়া দুটো ভিন্ন দলকে নির্দেশ করে। চোখ আকৃতির একটি ঝরণা, একটি জাদুঘর এবং পাঠাগারও হামিদুর রহমানের নকশার পরিকল্পনায় ছিল।

হামিদুর রহমান এমনিভাবে শহীদ মিনারের নকশা করেছিলেন যাতে তা এই গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের আবহাওয়ায় টিকে থাকতে সক্ষম। তবে সামরিক শাসন জারির পূর্বে ভিত্তি, বেদী, কিছু কলাম, রেইলিং, পায়ের ছাপ, দেয়ালে আঁকা ছবি ও অন্যান্য কিছু কাজ অবশ্য সম্পন্ন হয়েছিল। আবার ১৯৬৩-সালে যখন উদ্বোধন করা হয় তখন হামিদুর রহমানের নকশার বেশিরভাগ কাজই অসম্পূর্ণ ছিল।

এরপর ১৯৭১-সালের ২৫ মার্চ গণহত্যা অভিযান অপারেশন সার্চলাইটের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শহীদ মিনারটি গুঁড়িয়ে দেয় এবং ধ্বংসাবসের ওপর ‘মসজিদ’লেখা একটি সাইনবোর্ড দেয়।

স্বাধীনতার পরবর্তীকালে বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে পুনরায় শহীদ মিনার নির্মাণের লক্ষ্যে কমিটি গঠন করা হয়। আর তারা ১৯৬৩ সালের নকশার উপর ভিত্তি করেই দ্রুত সময়ের মধ্যে শহীদ মিনার তৈরি করতে সম্মত হন। এরপরে ১৯৭৬ সালে নতুন নকশা অনুমোদিত হয় সেখানে-১৫০০ বর্গফুটের ভিত্তির ওপর চারটি ক্ষুদ্র ও একটি বৃহৎ কলাম মা ও তার ভূপতিত সন্তানদের নির্দেশ করে। আর এর পেছনে থাকবে একটি লাল সূর্য। এগুলো নির্মিত হয়েছিল উজ্বল মার্বেল পাথর দিয়ে। সিঁড়িতে ব্যবহার করা হবে সাদা রং যা এনে দেবে একটি শুভ্র সৌম্য সৌন্দর্য । প্রাচীরে রং করে লেখা থাকবে বিখ্যাত কবিদের কবিতা। কিন্তু এই পরিকল্পনা যথার্থরূপে বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি। নির্মাণকালে কলামগুলোর দৈর্ঘ্য পরিকল্পনানুসারে ধার্যকৃত দৈর্ঘ্যের থেকে কম হয়ে গেছে এবং মুখ্য তথা বৃহৎ কলামটির মাথা পরিকল্পনার চেয়ে বেশি বাঁকানো করে তৈরি করা হয়েছে।

বর্তমান শহীদ মিনার: সর্বশেষ ১৯৮৩-সালে স্থপতি এস.এইচ.এম. আবুল বাশারের নেতৃত্বে শহীদ মিনারের এলাকা সম্প্রসারণ করে ত্রিকোণ থেকে চতুর্ভুজ আকারে তৈরি করা হয়। আর এই নতুন পরিকল্পনায় হামিদুর রহমানের নকশার দেয়ালচিত্র পরিকল্পনা বাতিল ও বেইজমেন্টের অংশটি বন্ধ হয়ে যায়। যাকিনা শহীদ মিনারের বর্তমান রূপ। বর্তমান শহীদ মিনারের উচ্চতা ১৪ মিটার (৪৬ ফুট)।

উল্লেখ্য, সরকার ২০১০ সালের ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট শহীদ মিনারের ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণার্থে নয়টি নির্দেশনা দেন এবং জাদুঘর ও পাঠাগার নির্মাণের নির্দেশ দেন।

লেখক: এম.এ.জলিল রানা

Adds Banner_2024

শহীদ মিনার গড়ে ওঠার পিছনের ইতিহাস

আপডেটের সময় : ১১:৩৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩

জনপদ ডেস্ক: ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি সহ ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর ফিরে এলেই মনে পড়ে শহীদ মিনারের কথা। ৫২’র ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি উজ্জল আত্মত্যাগ, গৌরব আর সাহসের স্মারক বহনকারী মাস। ফেব্রুয়ারি মাস মহান ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের কথা ভাবলেই প্রথমেই কল্পনার চোখে যেন ভেসে ওঠে শহীদ মিনার। আর আজকের এই শহীদ মিনার যে প্রথম নয়। এর আগেও ভাষার জন্য শহীদদের স্মরণে বেশ কয়েকবার তৈরি হয়েছিল শহীদ মিনার।

১৯৫২-সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে করা মিছিলে কাঁদানে গ্যাস ও গুলি চালানো হয়। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ মিছিলেও আবার গুলি চালায় পাকিস্তানের সামরিক জান্তা সরকার। এতে শহীদ হন রফিক, সালাম, বরকত, আউয়াল, শফিউর সহ আরও অনেকে।তাদের এই মহান আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান ও বিনম্র শ্রদ্ধার প্রতীক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার যা বর্তমানে অবস্থিত ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে । বর্তমান আমরা যে শহীদ মিনার দেখছি হামিদুর রহমান হলেন এর স্থপতি । তবে মজার বিষয় এই শহীদ মিনারটি কিন্তু সর্বপ্রথম তৈরি হয়নি। ক্রমানুযায়ী বিচার করতে গেলে এটির পূর্বে আরও কয়েকবার নির্মিত হয়েছিল শ্রদ্ধার পরিচয় বহনকারি এ স্মৃতিস্তম্ভ।

Banglar Janapad Ads

যেভাবে প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ হয়: ২১ ফেব্রুয়ারির ছাত্রজনতার মিছিলে গুলির ঘটনার পর ২২ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা শহীদ মিনার তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। যথারিতি কাজ শুরু হয় ২৩ ফেব্রুয়ারি। ঢাকায় কারফিউ থাকা সত্ত্বেও ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কাজ শুরু হয়। আর শহীদ মিনারটি তৈরি করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। বদরুল আলম ও সাঈদ হায়দারের নকশায় শুরু করে রাতভর শহীদ মিনারটি তৈরির কাজ শেষ হয়। শহীদ মিনারটি ছিল ১০ ফুট উঁচু ও ৬ ফুট চওড়া। মিনার তৈরির তদারকির দায়িত্বে ছিলেন জিএস শরফুদ্দিন আর (ইঞ্জিনিয়ার শরফুদ্দিন বলে বেশি পরিচিত ছিলেন তিনি। আর বদরুল আলম ডিজাইন করেছিলেন এবং তাদের সহযোগীতা করেন দুজন রাজমিস্ত্রী।

বর্তমান শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ছাত্র হোস্টেলের (ব্যারাক) ১২ নম্বর শেডের পূর্ব প্রান্তে হয়েছিল। মেডিকেল কলেজ সংস্কার ও সম্প্রসারণের নিমিত্তে রাখা ইট ও বালু এবং পুরান ঢাকার পিয়ারু সর্দারের গুদাম থেকে আনা সিমেন্ট দিয়ে সাড়ে দশ ফুট উঁচু (৩.২ মিটার) ও ৬ ফুট (১.৮ মিটার) চওড়া শহীদ মিনারটি তৈরি করা হয়। পুরাতন ঢাকার পঞ্চায়েত সর্দারদের মধ্যে একজন ছিলেন পিয়ারু সর্দার। তার কাছে ছাত্ররা সহায়তা চাইলে নির্মাণের কাঁচামাল দিয়ে সাহায্য করেন তিনি। ভোরের আলো ফোটার আগেই শেষ করা হয় এ নির্মাণ কাজ। এরপর কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়ে সামনে লিখে দেয়া হয় ‘শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’।

শহীদ শফিউরের পিতা মাহবুবুর রহমান কর্তৃক ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে অনানুষ্ঠানিকভাবে এ শহীদ মিনারের উদ্বোধন করা হয়। ইতোমধ্যেই দৈনিক আজাদ পত্রিকায় ‘শহীদ বীরের স্মৃতিতে’শিরোনামে শহীদ মিনারের একটি খবর ছাপা হয়। এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দিন।ওই দিন বিকেলে পুলিশ মেডিকেল কলেজ হোস্টেল এলাকা ঘিরে ফেলে আর প্রথম শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে দেয়। পরে ঢাকা কলেজে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হলে সেটিও সরকারের নির্দেশে ঘুড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠে একাধিক স্মৃতিস্তম্ভ ।

জানা গেছে, ঢাকায় সর্ব প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হবার আগেই রাজশাহী সরকারী কলেজের ছাত্ররা ইট ও কাঁদা দিয়ে প্রথম শহীদ মিনার তৈরি করেছিলেন। রাতভর জেগে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করার পর সকালে পুলিশ গিয়ে তা ভেঙ্গে দেয়া। এসময় পুলিশের সাথে ছাত্রদের পিকেটিং করে। রাজশাহীতে নির্মিত শহীদ মিনারে লেখা ছিল “উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই। নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।”

১৯৫২-সালে রাজশাহী কলেজে বাংলাদেশের প্রথম শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ অপরাধ ট্রাইব্যুানেলর প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু। তিনার মতে, রাজশাহীর শহীদ মিনার তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল ২১ ফেব্রুয়ারিতেই আর এটি এক রাতেই তৈরি হয়েছিল। এটিই যে প্রথম শহীদ মিনার সেটা প্রমাণের কোনো চেষ্টা তারা না করলেও সময়ের হিসেবেই রাজশাহীর শহীদ মিনারটি ঢাকারটির আগেই তৈরি হয়েছিল বলেই তিনি অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

প্রভাতফেরির সূত্রপাত: ১৯৫৩-সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী শহীদ দিবস পালন করা হয় আর লাল কাগজ দিয়ে একই স্থানে পূর্বের শহীদ মিনারের অনুরূপ আর একটি প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়। পরে সেটিকেও কালো কাপড়ে ঢেকে দেয়া হয়। আর সেখান থেকেই প্রথমবারের মত প্রভাতফেরি বের করেন ছাত্ররা। এভাবেই প্রভাতফেরির সূত্রপাত ঘটে। পরের বছর (১৯৫৪ সাল) একি রূপে ২১ ফেব্রুয়ারিতে আবারও প্রভাতফেরি বের করা হয় ।

১৯৫৪-সালের ১০ মার্চ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে ৩ রা এপ্রিল শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক ৪ সদস্য বিশিষ্ট যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা গঠন করেন। ৯ মে এর অধিবেশনে তারা ঘোষণা করেন, তাদের ২১ দফা অনুযায়ী, শহীদ মিনার পুনঃনির্মাণ করা হবে আর ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘শহীদ দিবস’ আখ্যা দেয়া হবে। কিন্তু তারা এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করতে ব্যর্থ হন এবং ৩০ মে এই সরকারের পতন ঘটে। তবে ১৯৫৪-সালে ছোট আকারের একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয় যার উদ্বোধন করেন নাট্যগুরু নুরুল মোমেন। আর ১৯৫৭ সালে বড় আকারে শহীদ মিনার তৈরির কাজ শুরু হয় ।

শহীদ মিনার (১৯৬৩-১৯৭১):
১৯৫৬-সালে আবুল হোসেনের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন পূর্তমন্ত্রী আবদুস সালাম খান শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে একটি স্থানকে নির্বাচন করেন। পরবর্তীকালে সেখানে জনৈক মন্ত্রীর শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার কথা থাকলেও জনতার বিপুল আপত্তির মুখে তা করেন না। পরে ভাষাশহীদ রিকশাচালক আউয়ালের মেয়ে বসিরনকে দিয়ে শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করানো হয়।

১৯৫৬-সালে এ.কে. ফজলুল হক ও আ: লীগের নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের উদ্যোগে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানেই শহীদ দিবস পালিত হয় এবং এতেই শহীদ মিনারের নির্মাণ প্রক্রিয়া আরও বেগবান হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের সম্মুখে শহীদ মিনার কমপ্লেক্স তৈরির পরিকল্পনা করা হয়।হামিদুর রহমান ও নভেরা আহমেদ স্থাপত্য নকশার দায়িত্ব পান। ১৯৫৭-সালের ৯ নভেম্বর আবার এটি তৈরির কাজ শুরু হলেও সামরিক আইন জারির কারণে নির্মাণকাজ বিলম্বিত হয়। এর পর ১৯৬২-সালে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর আজম খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েদেন যে,শহীদ মিনারের নকশায় পরিবর্তন এনে একে সংক্ষিপ্তাকারে শেষ করতে বলেন। ১৯৬৩-সালের ২১ ফেব্রুয়ারী ভাষাশহীদ বরকতের মা হাসিনা বেগমের হাতে শহীদ মিনার স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন হয়। যদিও তখনো সম্পূর্ণ কমপ্লেক্সের কাজ সম্পন্ন হয়নি।

হামিদুর রহমান ও নভেরা আহমেদকে নিয়ে যে শহীদ মিনার তৈরির পরিকল্পনাটি নেয়া হয়েছিল তা হলো- কেন্দ্রীয় বেদীতে অর্ধ-বৃত্তাকার কলাম মা ও তার ভূপতিত সন্তানদের নির্দেশ করবে।চোখে সূর্যের আলোর ন্যায় প্রতিফলন নির্দেশ করতে হলুদ ও গাঢ় নীল রং এর কাঁচ কলামগুলোতে বসানোর কথা ছিলো। আর মেঝেটি হবার কথা ছিল মার্বেল পাথরের যেন এই কলামগুলোর ছাঁয়াসমূহের সময়ক্রমে স্থান পরিবর্তন এতে দেখা যায়।

বেদীর নিচে বেজমেন্টে-১৫০০ বর্গফুট (১৪০ বর্গমিটার) এর একটি প্রাচীরচিত্রে উল্লেখ থাকার কথা ছিল ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের এবং বাংলা অক্ষরযুক্ত একটি রেইলিং সৌধটির সামনে স্থাপনের কথাও ছিল। আর লাল ও কালো রঙ্গা দুটি পায়ের ছাপ অঙ্কনের কথা ছিলো যাকিনা ভাষা আন্দোলনের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেয়া দুটো ভিন্ন দলকে নির্দেশ করে। চোখ আকৃতির একটি ঝরণা, একটি জাদুঘর এবং পাঠাগারও হামিদুর রহমানের নকশার পরিকল্পনায় ছিল।

হামিদুর রহমান এমনিভাবে শহীদ মিনারের নকশা করেছিলেন যাতে তা এই গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের আবহাওয়ায় টিকে থাকতে সক্ষম। তবে সামরিক শাসন জারির পূর্বে ভিত্তি, বেদী, কিছু কলাম, রেইলিং, পায়ের ছাপ, দেয়ালে আঁকা ছবি ও অন্যান্য কিছু কাজ অবশ্য সম্পন্ন হয়েছিল। আবার ১৯৬৩-সালে যখন উদ্বোধন করা হয় তখন হামিদুর রহমানের নকশার বেশিরভাগ কাজই অসম্পূর্ণ ছিল।

এরপর ১৯৭১-সালের ২৫ মার্চ গণহত্যা অভিযান অপারেশন সার্চলাইটের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শহীদ মিনারটি গুঁড়িয়ে দেয় এবং ধ্বংসাবসের ওপর ‘মসজিদ’লেখা একটি সাইনবোর্ড দেয়।

স্বাধীনতার পরবর্তীকালে বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে পুনরায় শহীদ মিনার নির্মাণের লক্ষ্যে কমিটি গঠন করা হয়। আর তারা ১৯৬৩ সালের নকশার উপর ভিত্তি করেই দ্রুত সময়ের মধ্যে শহীদ মিনার তৈরি করতে সম্মত হন। এরপরে ১৯৭৬ সালে নতুন নকশা অনুমোদিত হয় সেখানে-১৫০০ বর্গফুটের ভিত্তির ওপর চারটি ক্ষুদ্র ও একটি বৃহৎ কলাম মা ও তার ভূপতিত সন্তানদের নির্দেশ করে। আর এর পেছনে থাকবে একটি লাল সূর্য। এগুলো নির্মিত হয়েছিল উজ্বল মার্বেল পাথর দিয়ে। সিঁড়িতে ব্যবহার করা হবে সাদা রং যা এনে দেবে একটি শুভ্র সৌম্য সৌন্দর্য । প্রাচীরে রং করে লেখা থাকবে বিখ্যাত কবিদের কবিতা। কিন্তু এই পরিকল্পনা যথার্থরূপে বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি। নির্মাণকালে কলামগুলোর দৈর্ঘ্য পরিকল্পনানুসারে ধার্যকৃত দৈর্ঘ্যের থেকে কম হয়ে গেছে এবং মুখ্য তথা বৃহৎ কলামটির মাথা পরিকল্পনার চেয়ে বেশি বাঁকানো করে তৈরি করা হয়েছে।

বর্তমান শহীদ মিনার: সর্বশেষ ১৯৮৩-সালে স্থপতি এস.এইচ.এম. আবুল বাশারের নেতৃত্বে শহীদ মিনারের এলাকা সম্প্রসারণ করে ত্রিকোণ থেকে চতুর্ভুজ আকারে তৈরি করা হয়। আর এই নতুন পরিকল্পনায় হামিদুর রহমানের নকশার দেয়ালচিত্র পরিকল্পনা বাতিল ও বেইজমেন্টের অংশটি বন্ধ হয়ে যায়। যাকিনা শহীদ মিনারের বর্তমান রূপ। বর্তমান শহীদ মিনারের উচ্চতা ১৪ মিটার (৪৬ ফুট)।

উল্লেখ্য, সরকার ২০১০ সালের ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট শহীদ মিনারের ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণার্থে নয়টি নির্দেশনা দেন এবং জাদুঘর ও পাঠাগার নির্মাণের নির্দেশ দেন।

লেখক: এম.এ.জলিল রানা