জাতীয়

আদিবাসীদের ‘সাংবিধানিক স্বীকৃতি’ দেওয়ার দাবি

জনপদ ডেস্ক: আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়াসহ বেশ কয়েক দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন। সংগঠনটি বলছে, বাংলাদেশে আদিবাসীরা সাঁওতাল বিদ্রোহ, টঙ্ক, তেভাগা আন্দোলনসহ অধিকার আদায়ের এক গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামের উত্তরাধিকারী। তাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। সমাজে অন্তর্ভুক্তি ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ আজ সময়ের দাবি।

আজ (রোববার) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন  ইউনিয়নটির সভাপতি রেবেকা সরেন এবং সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো।

বিবৃতিতে বলা হয়, আগামীকাল ৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হবে। জাতিসংঘের আদিবাসী সংক্রান্ত কার্যসম্পাদনকারী একটি দলের প্রস্তাব অনুযায়ী ১৯৮২ সাল থেকে ৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। এ দিবসটি শুধু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার দিবস নয়, আদিবাসী ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামী জনসাধারণের অধিকার আদায়ের দিবসও বটে। এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘কাউকে পেছনে ফেলে নয়; আদিবাসী অধিকার প্রতিষ্ঠায় নতুন সামাজিক অঙ্গীকারের আহ্বান।’

আরও বলা হয়, বাংলাদেশে আদিবাসীরা সমতল ও পাহাড়ী এলাকায় বসবাস করেন। বাংলাদেশে রয়েছে ৪৪টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী ও ৩৪টি বিভিন্ন ভাষা। তাদের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি, রীতিনীতি, আচার ব্যবহার, পোশাক-পরিচ্ছদ ও ধর্মীয় বিশ্বাস। আদিবাসীদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও রীতিনীতি রক্ষার রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক উদ্যোগ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, নিজস্ব সামাজিক বৈশিষ্ট্য সবই বিলীন হয়ে যাবে। তাই রাষ্ট্রীয়ভাবে আদিবাসীদের অধিকার ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশের কিছু কিছু সমতল ও পাহাড়ি এলাকায় আদিবাসীদের ওপর নিপীড়ন, নির্যাতন চলছে, নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। অদিবাসীরা যখন তাদের অধিকার, দাবি আদায়ের লড়াই করছে তখন তাদের গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে। অবিলম্বে আদিবাসী নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানানো হয়। কোভিড-১৯ অতিমারীর কারণে আদিবাসীরা কর্মসংস্থান হারাচ্ছে এবং চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছে। দূর্গম এলাকায় বসবাস করায় কোভিডের টিকা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আদিবাসী এলাকাগুলোতে টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন এবং জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে আরও যেসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে- কোভিড-১৯ পটভূমিতে আদিবাসীদের জন্য আলাদা বরাদ্দ ঘোষণা করা এবং বরাদ্দ দরিদ্র-দুঃস্থ আদিবাসীদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা, আদিবাসী গণতান্ত্রিক সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণে সাহায্য বণ্টনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করা, বাংলাদেশের সংবিধানের ৬ (২) ধারা বাতিল করে আদিবাসীদের অধিকারের স্বীকৃতি দিয়ে পুনর্লিখন করা, আদিবাসীদের ভূমি, ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য রক্ষায় প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সমর্থন নিশ্চিত করা এবং সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন গঠন করা।

আরো দেখুন

সম্পরকিত খবর

Back to top button